DEHLIJ

প্রদীপ চক্রবর্তী

চন্দ্রকুমার থেকে লেওনার্দো : ইসরোর একটি অপঠিত অভিযাত্রা 




এক .


অদ্ভুত নৈঃশব্দ্য শরীরময় সময় - স্থানাঙ্ক ভেঙে ছায়াদের সন্ধে হয়ে আসে| ছায়াদের দীর্ঘপ্রণালী তখনো লেগে আছে, খন্ডহর মাঠের আশপাশে এগিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে লেওনার্দো| 

লেওনার্দো কিছুমাত্র শিক্ষায় মার্জিত নয়| প্রাকৃতিক মায়ায় রত্নগঞ্জেও আপৎকালীন আচরণের মধ্যে তাকে আমরা ফুটফুটে উঠতে দেখি 

দেখি আর ভাবি, সে কোনওদিন ভুলতে পারবে না চোখের ভেতর স্মৃতিহীন ব্ল্যাকহোল আবেশবাহিত| সে - সবই বাল্যখেলা, এর কোনও ওষধি নেই, প্রতিওষধির মধ্যেও ইঁদুর হওয়ার দৌড় নয়তো বসে যাবে তিন চাকা| 

ফেলে যাওয়া পথের মেয়ে কোয়েল ডাকলো নাকি? 

একটা গণপ্রসারী ফাটলো মূলানুগ সুরে,

বিজন অস্ত্রাঘাতে! 

ওই চরজমিনের  আওলিয়া বীরবৃন্দের বৈপরীত্য প্রায় , যেন রূপখরা চোখের চাষে ফুটিয়ে তুলছে  শ্রাবণভূমির মৈত্র কিংবা গতরখেঁকি শুঁড়ির হরিণবাড়ি ও মাতালের চন্দ! ও আমার

 চেঁদো , চান্দু অণু অনুপম, তোর ভুবনখোর ছায়া ধরা পড়লো জলের পাতে| লেওনার্দো চশমার কাচ মোছে আর শব্দদের ফার্ন রোডে হাওয়া দেয়| শীত শীত পুরনো গমের গুম্ফায় সাঁতার শিখছে চাঁদ| জলদস্যুদের বেলাভূমি  আর একটা শেষ ট্রলি ,  বায়োস্কোপ  হাওয়ায়  ছুটে চলে আকালের সন্ধানে  


দুই.


ও হো! আমরা তার  জাদুপানীয় চিনতে পারি নি|

বালুকাবেলার ইয়েতি দেখে নি যে অশীতিপর, তার স্বপ্ন আসলে পাথর কাটার শব্দে অসমাপ্ত স্ল্যাব, অথচ দেখো লেওনার্দো, এই সলজ্জশূন্যতা আমাদের গড়পড়তা মন, কুলুঙ্গিতে প্রদীপ ছুঁয়ে ছুঁয়ে জোনাকি - বিষাদ জেনেছি আমরা 


খুব সহজেই উদ্গত হারানোর চিৎকার ছেড়ে চলে গেছে শেষ ট্রেন| চশমার কাচে পুড়ে গেছে রোদ্দুর| অনলগন্ধ মেশানো ফাঁকা ইস্কুলেরা শেখায় ত্রিবাদুর ত্রিবাদুর! খেয়ালের ভুলে জাদুকরের নৃত্যরত শয়তান রোদ্দুরে চুল শুকোতে দেবার ফাঁকে আড়চোখে দেখে নেয় উঠোনের একপাশে আটপৌরে সব্জির চাষ| আমাদের নিচু  তক্তাপোশ, কুলুঙ্গির ব্রজনাথ হাঁসচড়ানোর চৈ চৈ দুপুরে ভালোবাসাহীন অদৃশ্য নৌকোর দিকে জাদুকরকে ঠেলে দেয় নিস্পৃহ স্ত্রীযন্ত্র থেকে মৈথুনের জন্ম নেবার কাহিনীটুকু জেনে নেবার জন্য 


তিন.


গত  কলসে ভুবনের তিন পাড়েই  সাঁকো যখন ডুবে গেলো, যখন দূর পৃথিবীর কোনও এক নদীর ধারে গান গাইছেন তনুজা, শুনছেন সাদাকালো সৌমিত্র ও শুভেন্দু, যখন রাত বারোটার সময় সুনসান মফস্বলের একটি জনৈক গলির মুখে অটো থেকে নেমে চন্দ্রকুমার টলতে টলতে এগিয়ে গেলো ভুল পথে ভুল বাড়ির ঠিকানায় ঠিক তখনই মধু ও মালতি, তমাল ও কুঞ্জ, অনিবার্য স্মৃতিচিহ্ন ফেলে রেখে অনন্ত অন্ধকারে তীক্ষ্ণ ও সংক্ষিপ্ত চিৎকারে জানিয়ে গেলো অবাগ্মী দীর্ঘশ্বাসে জন্মেছে, আকাশে বিদ্যুৎশিখর | সমগ্র ভূষণভার কখনো পড়ে নি অথচ বিগলিত তুষারদগ্ধ গ্রামীণ সেতুর পথ অস্তগাঢ় মুখের মায়া তোলপাড় হতে হতে আবার জুড়ে যাচ্ছে আকাশে| চন্দ্রকুমার যেদিন অবিকল বাতাসসুদ্ধ স্বপ্নের মধ্যে ঢুকেছে সেদিনের ওড়া ঝরা পাতা,  ঝিঙ্গুরের ডাক আর অন্ধকার এসবও বোঝা যায়, ধৈর্য নিয়ে পড়ে ফেলা যায় 


এখন কুন্ঠিত হই সামান্য ফুলের পরাগে| এখনও চন্দ্রযানে আমরা দুজন আছি পরস্পরের ঠোঁট চেপে| ভাঙা ইট কাঠ লোহা পলেস্তরা কাগজপত্তর মাংস হাড় গেঞ্জি ছেঁড়া খোঁড়া খুনসুটি গপ্পোগুলো পরস্পরের দিকে কিছুতেই ঘুরে তাকাবে না 


চার .


তুমি আমার কাছে যা চাইছো তা  অগ্র পশ্চাৎ সময় - স্থানাঙ্ক ভেঙে ছই - বোঝাই বস্তা - বস্তা ইয়াকপুচ্ছ, পশম, চামর,প্রোমোয়া জাতির দৈবশব,খড়কুটো, একটি দুটি ঝুমঝুমি সাপ, বিবর্ণ হাড়ের আয়না থেকে মরা সাহেবের কোট 


তিনি বলে চলেছেন পসরা | নির্বিকার নৈঃশব্দ্য ক্ষয়ে যাচ্ছে| মেঘের ফাঁক দিয়ে আত্মহত্যা লিপি নামিয়েছে চন্দ্রকুমার| আরও যাকে খুঁজছো,সেই একজেদি অভিমানী সমাজদেবতা বসে আছেন হেতালের বনে| মেয়াদ ফুরোলে,সমুদ্র চিলের নখে বাঁক নেয় পাকদন্ডী| প্রত্নহিম বেদেনির স্নানাগারে নৌকো ডুবছে| পুরোনো ও উপেক্ষিত  জাদুপানীয়   আহ্লাদে ছত্রিশখান হয়ে বললো, আমরা জ্যোৎস্নার কক্ষপথে গলে গলে পড়বো| শূন্যতা অপ্রাপ্তিবোধে মনে পড়ে যায়,খুব রোগা হয়ে যাওয়া একটা গাছ হয়ে দোতলার বারান্দার রেলিঙ বেয়ে উঠে আসতে চাইছে চন্দ্রকুমার| কষের রক্তে পোড়া মাংসের মতো শান্তি! জানলা গরাদ ভেঙে দেয়ালে ম্যুরাল  হবে|

গতরে জ্যান্ত জিয়ো জায়মতী চন্দ্রকুমার   মুজরো বসাবে গণহাটে| একটি বিদ্যুৎলতা জ্বেলে দেবে জাদুকরী| অন্ধ মায়ের মতোই তার চুল এলোমেলো ...


2 comments:

  1. পছন্দগুলো পেলে ভাললাগে আর সেই ভাললাগাগুলো বলে উঠতে পারি না। ভাললাগল প্রদীপ।

    ReplyDelete
  2. অপূর্ব! সবকটা।

    ReplyDelete

FACEBOOK COMMENT