নজর উল ইসলাম
প্রশ্নচিহ্নে উদাসভূমি
১
জীবন বলতে যা বোঝায় আমরা তার ধারেকাছে
যাইনি। শুধু বেলে মাছের মত পুকুরের কিনারে
গা-ঘষতে ঘষতে যেটুকু সঞ্চয়। দাঁড়িয়ে থাকি
বীজতলার মুখ চেয়ে কীভাবে ফোঁটে আর
ফোটাগাছগুলি বিস্ময় চিহ্ন হ'য়ে যায়। ঘোলাটে
তামাশা আর অনাবিল আলো নিয়ে রোজ রোজ
যে সাঁতার দিচ্ছি, খেলাঘর ভর্তি করছি, কব্জির
রক্ষাকবচ নিয়ে মেঘলা দুপুরে সমীক্ষাপত্র লিখে
অশ্রুমুগ্ধ গানে ভরিয়ে ফেলছি সুখপাখির স্বপ্নমন,
ডানায় জমাচ্ছি আকুল অভিসার, আসল
প্রশ্নচিহ্নে মুখ ও মুখভার ঝরাপালক...
২
চক্রশিকারী সেজে বটতলায় যখন পা-রাখি
শ্বেতপরিরা দিন-খোয়াবে হরিণ ছুটিয়ে আনে,
ভাষ্য হয় কথা-শিল্পের মুখ ও মুখোশ, দ্রবণ হবে
কী সমগ্র চাহনিতে থোকা থোকা ফুল এসে,
পিপাসা-প্রণয় শেখায়, হিরণ্য ঘাসের ভেতর
থেকে লাউডগার মত আহ্লাদ মেঘময়ূর ঝুঁকে
পড়ে অক্ষরের দৃশ্যময় অনন্তে...
৩
বুলবুলিদের পালিশ গলায় উদাসী মনগান ভাসতে
ভাসতে মোহবন্দি ঘরে তোলে সীমানার অসীম
প্রলাপ-ধ্বনি, শালিকের বাবুইয়ের ধানপাকা
মর্মলোভী এত-ই রাক্ষুষে দাঁতে দাঁত কষে সব
সবই জীবন ও প্রাণশক্তি আলোবিন্দুতে রাশ রাশ
খোলসে বন্দি হ'য়ে তৃতীয় নয়ন দেখে ফ্যালে,
বাজে, বাজায়; শিসধ্বনির অন্তঃকরণে, ভিজে
যাই শুকনো ছাপমন্ত্রে বাঁশি ও সুরের নিমজ্জন
পালিত কোলবালিশের মতন, এ-এক বর্ণচিত্র
খোলসা আগুনে গলতে থাকে পাথর পবিত্রতায় মন,
করুণাময় কী যে শ্রুতি ভালবাসা নিশিমালার মুগ্ধকরণ...!
Post a Comment