অতনু ভট্টাচার্য
দুই কবি ও বিদূষী
দুই কবি বসে আছেন
‘তুমুল যৌনতার ভেতর প্রগাঢ় মাতৃত্ব’ এই নিয়ে
দু-দুটো মত । বন্ধুত্বপূর্ণ, বিবাদাস্পদ আবহাওয়া।
অগত্যা মাঝে এলেন এক বিদূষী শিল্পী
জানালেন : ‘তুমুল যৌনতার ভেতর প্রগাঢ় মাতৃত্ব’ নিয়ে
তাঁর মনে কোনো বিরোধ নেই।
বিবাদি কবি বললেন : এ বিষয়ে বিদূষীর কথাই তাহলে গ্রাহ্য হোক।
কেন না সে বিদূষী ও নারী, এ বিষয়ে তারই প্রধান অধিকার।
অথচ বাদি কবি যারপরনাই চান প্রবীন কবির মন জিতে নিতে ।
বিদূষী হাসে—
শিশুপাঠ্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শনের পক্ষপাতগুলো, মাতৃত্বের ছদ্ম কীর্তি,
শঙ্করাচার্য ও চানক্যের অপমান, মনে পড়ল ফ্রয়েডের কথাও :
‘নারী তুমি পুরুষাঙ্গহীন অসম্পূর্ণ পুরুষ’ !
দুই কবিকে সঙ্গে নিয়ে তাহলে এখন কোথায় চলেছেন বিদূষী ?
তুমুল যৌনতা ও প্রগাঢ় মাতৃত্বের জৈবিকতার ভেতর কৃত্তিম সংস্কার
নিয়ে ঢোকা নিষেধ , বলেই হঠাৎ এমন ঘুরে দাঁড়ালেন—
উফ্ সে যে কী শীতল বিস্ফোরণ !
পর্ণা ও সঞ্জীবদাকে
তোমাদের বালির বাড়িটির কথা। আমি ওবাড়ির গবাক্ষটির
কথাই আসলে বলব।
জানলা দিয়ে জোয়ার ভাঁটা, কচুরিপানার তীর্থযাত্রা ,
মেছো নৌকো, প্রোমোদ তরী, রোদ ঝিলমিল, বাণের ঢেউ,
ঘূর্নিজল, ধ্যানি বক, ,জলপিপি, হঠাৎ শুশুক, ব্রীজের ছায়া,
অস্তরাগ, ভাষাতীতের কত শব্দ , ধ্বনি …
আড্ডাছবিছন্দের কেন্দ্রে বসে আছ তোমরা। তোমাদের
হৃদয়গবাক্ষটির কথা যত বলি— ধ্বনির স্মৃতির সঙ্গে
নয়া রঙ লেগে নতুন নতুন অর্থ ওঠে ফুটে !
গবাক্ষযুগলের বন্ধুত্বের পাশে যখনই বসি, এক ভ্রাম্যমাণ
চিরস্মরণীয় বোধ …
আবার, তোমাদের ভাবতে চাই বাক্য ও মনন,
অদ্বৈতভাবে, তোমাদের, ক্রমপ্রসারণশীল মনে হয় !
Post a Comment