সুজয় যশ
তুমি আমি ভালো থাকি যেভাবে
তোমার ডেনিম শার্টের প্রথম বোতামে
বেঁধে রাখা ষোলো বছরের প্রথম ঘুড়ির সুতো
চুলের খোঁপা এদিক ওদিক আয়নায়
সাজিয়ে দিলাম অক্টোবর শীতের নরম
তবুও একলা হেঁটে
অদৃশ্য হলে তিল রঙ কুয়াশা শহরে
ব্যালকনি টবে রেলিং টপকে যায় ব্লু স্টার ক্রিপার
আমার হাত আলগা হতে থাকে
কেটে ফেলি প্রথম ঘুড়ির সুতো, উড়ে যায়
উড়ে যাক সে ক্ষণ অবাধ্য অক্টোবরে !
গড়িয়ে পড়ছে তোমার আমার ভালবাসার স্পর্শ
আমার শূন্য দুহাতে জড়িয়ে রাখি নভেম্বর
পশমের মতো দারুণ এক ভোরে
আমিও কুয়াশা মাখি এই দেবদারু ভোরে
আমায় খুঁজো না আর পাতার শিশিরে
গড়িয়ে পড়ছি দেখো আলগোছে
পাতার প্রথম অক্ষর হয়ে
পাহাড়ি মাটির সোঁদা গন্ধে !
মুক্তি কখনো কখনো দরকারি হয়ে ওঠে
নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়তে
উড়তে উড়তে - হাসতে হাসতে - দেখতে দেখতে
নিজেকে কুড়িয়ে পাওয়া নুড়ি পাথরের মত
রেখে দেওয়া সেই ডেনিম শার্টের বুক পকেটে
তুমি আমি ভাল থাকি অন্য রকমে
প্রেমহীন মোহহীন অনুচ্চারিত পথে মুক্তি !
মুক্তি
মুঠো থেকে মুঠোয় পাল্টাচ্ছে আর্তি ।
মৃত প্রদীপ শুধু পিঠ উল্টে আকাশ
হয়ে ওঠে । সূর্য ওঠে মুঠো পাল্টে ।
মুক্তির জন্য যা কিছু আবহমান ---
প্রজ্জ্বলিত আত্মস্খলনের মুহূর্তে
নিজের মুক্তি নিজের মুঠোয় ।
মুক্তির অনুগত প্রেম । বাকি কেউ
চাইলেই পারে না দিতে মুক্তির স্বাদ ।
একক দ্রাঘিমাংশে লেগে থাকে তুষ্টান্ন ।
রহস্যের পাঁজরে রহস্য । সূর্য ভীষণ ঠান্ডা ।
মুক্তির নেশায় আকাশ খুঁড়লে
বুকের মরা নদী আফিমের জঙ্গল থেকে
স্রোত চুরি করে । ছায়াহীন কেউ
ছুঁড়ে দেয় আলোর আঁচলে
মুঠো মুঠো মুক্তির ঢেউ ।
মুক্তির অনুগত প্রেম । স্বনির্ভর !
শব্দ লোভী
শব্দরা মাছির মত ভ্যান ভ্যান করে চলেছে,
ধরতে পারছি না কিছুতেই ।
ভাবনার মুঠোয় শব্দের পারদ
ঠিক ফসকে যায় আঙুলের ফাঁকে ।
তিন দিন স্নান করিনি,
নোংরা শরীরে মাছিদের অপেক্ষায় ।
আমার চেয়ার জুড়ে অক্ষর ।
বাসি কাপড়ে মৃত কবিদের গন্ধ ।
জানলা ভেঙে হুলোবেড়াল কেঁদে গেলো ।
আমি লিখতে পারি না,
মাছি ধরার লোভে ।
মায়ের ঘুম পাড়ানি গানটা কিছুতেই মনে আসল না আজ।
তবু ঘুম পায়। ঘুম আসে । ঘুম ভাঙে ।
আমার বাসি শরীর
কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়েছে শব্দ মাছিরা,
এবার বমি হবে !
সাদা পাতায় এখন
কয়েক শো মাছি ,
আমার লোভী কঙ্কাল জেগে ,
পরের পাতার জন্য ।
Post a Comment