আফ্রিদা মাসুমা
একদিন
তবে যাব একদিন তোমার সাথে
রিং রোডে ঘুরতে
যখন
মৃত্যভয়ের সংকট পেরিয়ে মুচকি হাসে
শেষ শীতের ঝরাপাতারা
আর
নবজাতক বিকাল কাঁদে প্রকৃতির আতুড়ঘরে।
যাব,
নিজামুদ্দিন, সরোজিনী আর দিল্লি হাটের বাজারে,
ম্যাট্রোর ভনভনে বাতাসে উড়িয়ে চুল
ভীড়ের গন্ধ শুকে শুকে আহরোণ করব জীবন,
জীবন, যাকে অনেককাল ঠকিয়েছে ধ্রুবতারা
কোথায় নিয়ে যাবার আশ্বাসে।
বাদামী গাছেদের মুখে আসন্ন চৈতের খবর ,
বাদামী গাছেদের চোখে পর্দাফাঁসের আতঙ্ক,
শহরের ধমনীতে চলা দুরন্ত সিটি বাস ,
উদ্যত শিমুল ফুলের আঘাতে রক্তাত্ব গলফ লিঙ্ক্স,
জামিয়ার ফুটপাথে বসে শুষব সেসব থেকে প্রাণ
আর তোমার কাছে শুনব গ্রামসি।
সময় হবে কাওয়ালদের হারমোনিয়ামে হাত দেওয়ার,
সময় হবে রোটির গন্ধ বাতাসে ছড়ানোর,
আকাশে ঘুড়ীর সুতায় কাটা পড়ে যাওয়ার,
কাবাবের দোকানে আংড়ায় আগুন ওঠার,
সময় হবে
আস্তে আস্তে মাথার সূর্য্য পায়ে পড়ে যাওয়ার
আমি পায়ের সূর্য্য থেকে আঁজলা ভর রক্ত এনে
লিখব আবার জীবন,
জীবন যাকে অনেককাল ঠকিয়েছে ধ্রুবতারা
কোথায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাসে।
আমি দেখেছি ওদের সবাইকে
যারা আকাশে চেয়ে চেয়ে কবরে দিয়েছে পা,
ছাতিম ফুলের গন্ধে যারা ভাসিয়েছে বুক,
আমি দেখেছি ওদের
যারা মূমূর্ষ অতীতের মুখে দিয়েছে ডালিম দানা,
নেংটো চোখে যারা খেলেছে কানামাছি।
ওদের চোখের তারায় থাকা এক টুকরো বাস্তব
লাল ফিতায় বেঁধে আমি উড়াব আকাশে-
ধ্রুবতারার সামনে,
অন্তত এততুকু আছে আমার হাথে ব্রহ্মাণ্ডের-
বাষ্পের কাছে আছে বৃষ্টির যতটুকু।
ব্রম্মাণ্ড জানে না কতটুকু রাখে তার
আস্তাকুড়ে জড়ো চিল, শকুন, কাক
আস্তাকুড়ে খুটে খাওয়া উলঙ্গ ছেলে,
নীম ফুলের পাশে ব্যস্ত করপোরেটের শ্রমিক,
ফুটপাথে বোনের মাথায় ঊকুন বাছা মেয়ে
যেমন জানে না সদর ভবন
কতটুকু ঝরিয়েছে ঘাম সেদিন কতোগুলো হাথ।
তোমাকে বলতে চেয়েছি অনেককাল
সীমাপুরী আসো,
একফুঁটা স্ফুলিঙ্গ নিয়ে,
ভাত ফুটাব আমি- যে চাল বানিয়েছি
আজীবন পাজর পিষে।
রাঙা ভাতে আমার যে অনেককালের ক্ষুধা।
এসো,
আমার দুর্গন্ধী দাওয়ার ভাতের পাতে,
দেখতে বসে বলকের জোয়ার।
আমি নই ফেরেশ্তা, স্বর্গের দুত
হতেও চাই না আর সন্যাসী, পীর।
ঝরাপাতার গন্ধ বলে গেছে ভীড়ে
লজ্জা নাই তার, যার নাই কিছু ঢাকার
তোমার চোখে নিমেষে রেখে এক প্রশ্নবোধক,
এক বমনে উগরে যাব এ জীবন,
যাকে অনেককাল ঠকিয়েছে ধ্রুবতারা
কোথায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাসে...
Post a Comment